আসন্ন ঈদুল আজহা, ভালো নেই নবাবগঞ্জের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা
18, July, 2021, 12:54:56:AM
মোঃ জুলহাজুল কবীর নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমন রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও জননিরাপত্তার জন্য নিষেধ-বিধি আরোপসহ কঠোর লকডাউনের প্রভাবে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার সহাস্রাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ক্ষতির মুখে তাদের অনেকেই এখন ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন । কঠোর লকডাউন ঈদুল আজহা পর্যন্ত কিছুটা শিথিল হলেও ব্যবসায় বেচা-কেনা একেবারেই কম।
উপজেলার দাউদপুর বাজার এবং উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে , হোটেল-রেস্তোরা, সবজি বিক্রেতা থেকে শুরু করে , মাছ ব্যবসায়ী, মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী, চা-পান-সিগারেট বিক্রেতারা সহ ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, তৈরি পোশাক, ছিট কাপড়, টেইলার্স, জুতা, ক্রোকারিজসহ বিভিন্ন আইটেমের প্রায় সহস্রাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গুলো মহামারি করোনায় প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। এতে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ওই সকল ব্যবসায়ীরা।
বিক্রি না থাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে তাদের দেনার পরিমাণ। সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করলেও কোন সুবিধা পাননি এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা প্যাকেজ বা ঋণ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন তারা।
পরিবারের তিনবেলা খাবার জোগাতে ঝুঁকি নিয়েও কেউ কেউ দোকান খুলে এদিক সেদিক ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। তবে ঠিকমতো বেঁচাকেনা না হওয়ায় পরিবার নিয়ে বিপাকে এসব স্বল্প আয়ের ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার সদরে ফুটপাতে ফল বিক্রেতা আশরাফুল ইসলাম জানান, ধার-দেনা ও এনজিও থেকে সুদে টাকা এনে তিনি এ ব্যবসা শুরু করছেন। কঠোর লকডাউন ঈদুল আজহা পর্যন্ত কিছুটা শিথিল করা হলেও ব্যবসার অবস্থা তেমন একটা ভালো না। বাজারে কোন লোকজন নাই। যে ফল বিক্রির জন্য ক্রয় করে এনেছি তা বিক্রি করতে না পারায় পঁচে যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আমার পরিবারের কেউ এই মুহূর্তে অসুস্থ হলে চিকিৎসা করার সামর্থ্য আমার নেই । ফল বিক্রির আয় দিয়ে তার ছয় জনের সংসার চলে। এখন ফল তেমন একটা বিক্রি না হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকার অবস্থা হয়েছে।
দাউদপুর বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, ছোট্ট একটা হোটেল থেকে আয় রোজগারই আমার একমাত্র ভরসা । লকডাউনে প্রায় হোটেল বন্ধ থাকায় এখন অর্ধহারে অনাহারে আমাদের দিন কাটাতে হচ্ছে।
কনফেকশনারী ও পান বিক্রেতা নুর জামাল বলেন, অনেক লুকোচুরি করে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৮০ টাকা বিক্রি করেছি, ৮০টাকা বিক্রি করে লাভ কত টাকা হবে, কিস্তি পরিশোধ করব কিভাবে আর খাবইবা ক ? এরকম শত শত মানুষ বিপাকে পড়ে নিরবে চোখের পানি ঝরাচ্ছে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আতাউর রহমান জানান, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সরকারিভাবে বিভিন্ন ধরনের প্রনোদনার মাধ্যমে দুঃস্থ, অসহায় এবং করোনা মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্থদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ সোম বলেন, বিষয়টি আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানাবো।