নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১১ নম্বর রোডের ঝিলপাড় বস্তিতে (মাতবরের বস্তি) বইছে শোকের মাতম।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঝিলপাড় বস্তির সামনে বেলুন ফোলানোর সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
ঝিলপাড় বস্তিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বস্তির শাহিন (১০), সিয়াম (৯), বিশ্বজিৎ (১২), রমজান আলী (১০) রাকিব ( ১১), শাকিলসহ সাত শিশু দুর্ঘটনাস্থলে ছিল। আর বাকিরা বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা বলে জানা যায়।
শ্যামলীর একটি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে আসা ঝিলপাড় বস্তির শাহিদা ও শাহাজানের ছেলে শাহিন (১০) বাংলানিউজকে বলে, ভ্যান থেকে বেলুন কিনে ফিরে আসি। তারপর সুতার জন্য আবার ভ্যানের কাছে গেলে এ বিস্ফোরণ ঘটে। চূর্ণবিচূর্ণ ভ্যানের নিচে আটকে থাকি।
শাহিন আরও বলে, এ সময় সিয়ামসহ সেখানে সাতজন ছিল। তাৎক্ষণিক অন্যদের নাম বলতে পারেনি সে।
শাহিনের মা শাহিদা বাংলানিউজকে জানায়, শাহিনের গলায়, থুতনি ও হাতে মোট ২০টি সেলাই দেওয়া হয়েছে।
১০০ টাকা নিয়ে জুতা কিনতে গিয়েছিল বিশ্বজিৎ। আহত বিশ্বজিতের মা জুমা বাংলানিউজকে বলেন, পাশের যমুনা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করি। লাঞ্চের ছুটিতে এসে ছেলেকে ১০০ টাকা দিয়ে যাই। সেই টাকা নিয়ে জুতা কিনতে গেলে সে দুর্ঘটনার শিকার হয়। আগামীকাল আবার হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলছে ডাক্তার।
বিশ্বজিৎ বাংলানিউজকে বলে, বিস্ফোরণের পর দু’চোখে বালু আর ধোঁয়া গেলে কিছু দেখিনি আমি।
নিহত রমজান আলীর বাবা বদিউল আলম ও ফুপা আবদুর রশিদ বাংলানিউজকে জানান, রমজান ঘটনাস্থলে মারা গেছে। তার দু’টি হাতই উড়ে গেছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এখন কোথায় আছে তা জানায়নি কেউ। আমরা কোথায় গেলে ছেলের মরদেহ পাবো কেউ সঠিক তথ্য দিচ্ছে না।
সরেজমিনে ঝিলপাড় বস্তিতে দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রূপনগরের ১১ নম্বর সড়কে বেলুন বিক্রি করার সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় বিক্রেতা একটি ভ্যানের উপর সিলিন্ডার থেকে বেলুনে গ্যাস ঢোকাচ্ছিলেন। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই ভ্যানটি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। পাশে থাকা কয়েকজন শিশুর শরীর ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী নূরুর ইসলাম জানান, বেলুন বিক্রেতা প্রতিদিনই ঝিলপাড় এলাকার বিভিন্ন রোডে বেলুন বিক্রি করতেন।
অপর প্রত্যক্ষদর্শী শামসুদ্দিন বলেন, বেলুনে গ্যাস ঢোকানোর সময় সিলিন্ডার থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিলো। কিছুক্ষণ পড়েই বিস্ফোরণ ঘটে।
জানা যায়, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১২ শিশুসহ ১৭ জন। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।