মোঃমিজানুর রহমানঃ
দুঃসময়ের কুষ্টিয়া ইসলামীয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ’কুষ্টিয়া ইসলামীয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক আ্ইকন ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা এম.জহুরুল ইসলাম মিল্টন। যিনি দুঃসময়ে কুষ্টিয়া ইসলামীয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের হাল ধরেছিলেন। প্রতিপক্ষের নানা সময়ে বিভিন্ন হামলা মামলা প্রতিরোধ করে কুষ্টিয়া ইসলামীয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের খুঁটি মজবুত করে দিয়েছেন। আজ সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকান্ড নিয়ে মনে হতাশা বিরাজ করছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক বিশেষ কিছু ঘটনাবলী ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা নিয়ে আলোচনায় উঠে আসা বিষয় তুলে ধরা হলো।
সাম্প্রতিক বিশেষ কিছু ঘটনাবলী ও প্রাসঙ্গিক ভাবনাঃ
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স এবং অ্যাক্ট অনুসারে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে 4 বছরের জন্য উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার নিয়োগ দেওয়া হয়। ঠিক তারই ধারাবাহিকতায় এখন থেকে 4 বছর পূর্বে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে, বর্তমান সরকারের অভিপ্রায় এর প্রেক্ষিতে, প্রফেসর ডঃ রাশিদ আসকারীকে মাননীয় উপাচার্য, প্রফেসর ডঃ শাহিনুর রহমানকে মাননীয় উপ-উপাচার্য এবং প্রফেসর ডঃ সেলিম তোহাকে মাননীয় ট্রেজারার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। যার মেয়াদ পূর্ণ হতে যাচ্ছে আগামী ২০ আগস্ট ২০২০ তারিখে। এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আসা-যাওয়ার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। উল্লেখ্য যে এই তিনজন শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষকই 1990 এর শেষভাগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রভাষক হিসেবে, প্রথমোক্ত দুইজন ইংরেজি বিভাগে এবং শেষোক্ত জন আইন বিভাগে যোগদান করেছিলেন। আরও যদি উল্লেখ করতে চাই প্রথমোক্ত জন রংপুরের মিঠাপুকুরে জন্ম নিলেও সফলতার সহিত রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে মেধা তালিকায় স্থান নিয়ে এইচএসসি পাস করে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ কে আলোকিত করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় যোগদান করেছেন। অপর দুজন কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলার সন্তান হলেও এইচএসসি পরবর্তী সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ও আইন বিভাগে মেধার স্বাক্ষর রেখে মতিহারের সবুজ চত্বর থেকে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন। আমার যদি ভুল না হয় প্রত্যেককেই পারিবারিকভাবে অত্যন্ত উজ্জল এবং গর্বিত পরিবারের সন্তান যাদের পরিবারের মানুষগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত। চারটি বছর প্রশাসন চালাতে গিয়ে অনেক ভুল-ত্রুটি হয়তো তাদের হয়েছে, কিন্তু একই সাথে আমরা যদি তাদের সফলতার খতিয়ান টা দেখি সেটাও কিন্তু কম নয়। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক একজন ছাত্র, সাবেক একজন ছাত্রনেতা, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার একজন মানুষ হিসেবে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে, আমি কিন্তু তাদের অনেক সফলতাও দেখতে পাই। এই প্রশাসনের হাত ধরেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিকীকরণএর দিকে অনেক ধাপ এগিয়েছে, যে বিশ্ববিদ্যালয়টি দুপুর দুইটার পরে ভুতুড়ে বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যেত, সেই বিশ্ববিদ্যালয় এখন বিকাল চারটা পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের মুখরতায় ভরপুর থাকে। বিকাল থেকে রাত্রি আট টা পর্যন্ত দর্শনার্থী এবং সান্ধ্যকালীন কোর্স কারিকুলামের কারণে মুখরিত থাকে। একটি বিশ্ববিদ্যালয় বিগত চার বছরে ভৌত অবকাঠামোর দিকে অনেক এগিয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের হল, ফ্যাকাল্টি ভবন, প্রশাসনিক ভবন, নতুন নতুন বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল এবং কলেজ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধন, স্বতন্ত্র ভাষা ইনস্টিটিউশন, বর্তমান প্রশাসনের প্রচেষ্টায় পাঁচশত কোটি টাকা প্যাকেজ উন্নয়নের মাধ্যমে, সকল দিক দিয়েই এবং সকল মানদণ্ডেই বিশ্ববিদ্যালয়টি অনেক এগিয়েছে। আমার বিশ্বাস আগামীতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন 175 একর থেকে 275 একরে উন্নীত হবে। কুষ্টিয়া থেকে ঝিনাইদহ পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য রেল সংযোগ হবে, শতভাগ একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে, রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট ও সিনেট নির্বাচন হবে, এর অনেক কিছুই ইতোমধ্যেই গোড়াপত্তন ঘটেছে এই বর্তমান প্রশাসনের হাত ধরে। আমি কাউকেই ছোট বা বড় করার জন্য আমার এই লিখাটি লিখছি না বা আমার অনুধাবন ব্যক্ত করতে চাচ্ছিনা। 1996 সালে প্রথম যখন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে, তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক প্রফেসর ডঃ কায়েস উদ্দিন স্যার কে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আমি তখন স্যারকে পেয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে স্যারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ, হাতে হাত মিলিয়ে আমার সহযোদ্ধাদের নিয়ে সকল উন্নয়ন ও ব্যর্থতা- সফলতায় পাশে থাকতে পেরেছি। তখন গভীর ভাবে দেখেছি স্যার কে কারা সহযোগিতা করছেন এবং কারা মুজিব আদর্শের হয়েও স্যার এর বিরোধিতা করছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যারের সফল সমাপ্তির কারণেই পরবর্তীতে স্যার কে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা হয়েছিল। আমার মনে হয় তাতে কিন্তু স্যার ছোট হয়ে যাননি বরং আমরা অনেকেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি নিয়ে তখনো স্যারের কাছে গিয়েছি, গর্ব করে বলেছি, ইবির সদ্য বিদায়ী উপাচার্য মহোদয় কে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। স্যার এর সময় তিনি কিন্তু পিতার আসনে বসে অনেক কে সন্তান তুলল জেনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে গিয়েছেন। তাকেও কিন্তু আমরা অনেকেই অপবাদ দিয়েছি সম্মানের সাথে, বিদায় দিতে পারিনি। তার পর প্রফেসর ডঃ আলাউদ্দিন স্যার কে কুষ্টিয়ার একজন কৃতি সন্তান হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য প্রফেসর ডক্টর আলাউদ্দিন স্যার ছিলেন, প্রফেসর কায়েস উদ্দিন স্যারের স্নেহের ছাত্র, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কায়েস স্যার উপাচার্য থাকা অবস্থায়, আলাউদ্দিন স্যার ছিলেন তার ছায়াসঙ্গী এবং সকল কর্মকান্ড ও উন্নয়নের সহ যোদ্ধা। প্রফেসর আলাউদ্দিন স্যারের হাত ধরেই এই বিশ্ববিদ্যালয়র অনেক উন্নয়ন হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় অনেক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে, তার ঋণ আমরা মুজিব আদর্শের মানুষগুলো কোনদিন শোধ করতে পারব না। তিনি মুজিব আদর্শের মানুষ, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাই দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশে দৃষ্টান্তমূলক অনেক কর্মকাণ্ড এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি করে গেছেন। সততার মূর্তপ্রতীক থেকে অনেক ঝুঁকি নিয়ে মুজিব আদর্শের অনেকের জন্য সর্বোপরি এলাকার মানুষের জন্য তিনি করে গেছেন। তৎপরবর্তীতে বর্তমান আওয়ামীলীগ জামানায় যে সমস্ত শ্রদ্ধাভাজন স্যারদের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, একই সাথে উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন,প্রত্যেককেই সরকার বাহাদুরের সানুগ্রহে বিশ্ববিদ্যালয়ের যথেষ্ট উন্নয়নের চেষ্টা করেছেন। অর্থাৎ এটাই প্রতীয়মান হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার এবং জাতির পিতার রক্ত ও রাজনীতির যোগ্য উত্তরাধিকার জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশের সর্বত্র উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও উন্নয়ন হয়। তারই ধারাবাহিকতার ফসল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উন্নয়নের ধারা, বর্তমান প্রশাসনের সফলতা। আমি অত্যন্ত দুঃখের সাথে গভীরভাবে লক্ষ্য করছি, বিগত বেশ কিছুদিন যাবত, যেটি সাম্প্রতিক সময়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের এই প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু শিক্ষক কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী, কিছু বহিরাগত অন্য দলের মানুষ যাদের মধ্যে কোনো আদর্শিক মিল নেই তারাই ব্যক্তিস্বার্থে একত্রিত হয়ে বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে, তাদের কে পুনঃনিয়োগ দিলে এখানে দুর্নীতি হবে, অতীতে তারা দুর্নীতি করেছে, তারা কোন উন্নয়ন করেনি, এই সমস্ত কথা বলে তাদের বিদায় বেলায় পরিবেশটা ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে, তাদেরকে ছোট করার চেষ্টা করছে, প্রকারান্তরে তারা নিজেরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মানুষ বলে দাবি করে, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায়ে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে, প্রকারান্তরে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধাচারণ করছে এবং সরকারের কর্মকাণ্ড, উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, যেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। একইভাবে বুঝে না বুঝে আমাদের ছাত্রলীগের কিছু ভাই বন্ধুরা সাবেক এবং বর্তমান মিলিয়ে তারাও তাদের ক্ষপ্পরে পা দিয়ে নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করছে, যেটা অত্যন্ত দুঃখজনক , লজ্জাজনক এবং শিক্ষা শান্তি প্রগতি,র চেতনা ও মুজিব আদর্শের পরিপন্থী। আমার মনে হয় আমার ওই ভাইদেরকে বলতে চাই, শিক্ষা শান্তি প্রগতি এই আদর্শ বুকে ধারণ করে যারা ছাত্রলীগের পতাকা কে ওই ক্যাম্পাসে পতপত করে উড়িয়েছে তারা কখনোই বর্তমান সরকার এর নিয়োগ দেওয়া কোন প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিদায়বেলায় কাঁদা ছোড়াছুড়ি করে আমাদের মাননীয় নেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যর্থ এবং প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেনা। আমি ছাত্রলীগের বন্ধুদের বলতে চাই ১৯৯৬ সাল থেকে আমাদের সরকারের সময়গুলোতে যে সমস্ত শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে এসেছেন তারা সকলেই কম বেশি ভালো কাজ করেছেন। একটি কথা আমাদের মনে রাখতে হবে নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করলে অপর পক্ষ আমাদেরকে দুর্বল করে, এর সুযোগ নেবে। মনে রাখতে হবে এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী ডক্টর হামিদ বা ডক্টর এনাম ভিসির জামানা নয়। এখানে যারা ডিভাইডেড এন্ড রুল এই ব্রিটিশ নীতি কে অবলম্বন করে ফায়দা লুটতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আপনারা সকলে, বিশেষ করে সাবেক ছাত্র নেতৃবৃন্দ যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন বা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আছেন, সকলে একত্রিত হয়ে অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে কুষ্টিয়া এবং ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগ পূর্বের যেকোন সময়ের চেয়ে এখন অনেক শক্তিশালী এখন আর দুই জেলার আওয়ামী লীগ ত্রিধাবিভক্ত নয়। এখন কুষ্টিয়া ঝিনাইদহে প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগের এমপি। কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ সহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের ভার আমাদের প্রাণপ্রিয় জাতীয় নেতা, জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থা ও বিশ্বাসের একমাত্র ঠিকানা জনাব মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি মহোদয় এর উপর। তার মত চৌকস ব্যক্তিত্ব হাল ধরে আছেন কুষ্টিয়া জেলার, ওই জেলাকে আন্দোলনের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে প্রিয় এমপি মহোদয় কে বিব্রত করার কোন সুযোগ নেই। সুতরাং যারা ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছেন, সকলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে এখন আর এখানে কোন ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের রাজনীতি চলবে না। আমরা যদি একটু গভীরভাবে চিন্তা করি, যে মানুষগুলো, প্রভাষক থেকে শুরু করে আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত, কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান, যারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি সন্তান, যারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকন, যাদের পরিবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত, সেই মানুষগুলোকে আমরা ছোট করে, তাদের মধ্যে বিভাজন করে, আমরা কাদেরকে সুযোগ করে দিতে চাচ্ছি। আমরা তাদেরকে করতালির মাধ্যমে, আনন্দের মাধ্যমে, বিদায় দিতে চাই, আমরা চাই বর্তমান সরকার আমাদের এই প্রিয় স্যারদের কে রাষ্ট্রের আরো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তাদের কে অধিষ্ঠিত করুক। আমার জানামতে ইতোমধ্যেই যেটি আমাদের মাননীয় উপাচার্য মহোদয় কে করেছে। উল্লেখ্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য 101 সদস্য বিশিষ্ট যে কেন্দ্রীয় জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে, তার অন্যতম সদস্য আমাদের প্রিয় ভাইস-চ্যান্সেলর রাশিদ আসকারী, বঙ্গবন্ধুর বাংলাতে প্রদান করা সকল ভাষণ কে ইংরেজিতে ট্রান্সলেট করার জন্য যে উপ-কমিটি হয়েছে তার অন্যতম সদস্য রাশিদ আসকারী স্যার। একটি কথা আমাদের মনে রাখা উচিত আজকে ভাইস চ্যান্সেলর কে, যে কোন দোষে দোষী করার অর্থ প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার মহোদয় কেও, তাদের দিকে আঙ্গুল উঠানো। আমরা কেমন আদর্শ বুকে লালন করি, নিজেদের হীন স্বার্থের জন্য একই আদর্শের বর্তমান সরকার এর নিয়োগ দেওয়া ব্যক্তিবর্গের দিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আঙ্গুল উঠানো এবং দোষী সাব্যস্ত করা, এটাই কি আদর্শের নমুনা। পরিশেষে শিক্ষা শান্তি প্রগতি,র সকল ভাইদের প্রতি আমার উদাত্ত আহ্বান। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত সকল সংগঠন, চেতনার মানুষগুলোর প্রতি আমার উদাত্ত আহ্বান সরকারের সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করুক, সরকারের অনেক গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনেক উইংস রয়েছে, তাদের মাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে, যাকে ভালো মনে করবে সেই ব্যক্তি দেরকে নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চালাক। তাই বলে আমরা যারা একই আদর্শের মানুষ, নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করে নিজেদেরকে দুর্বল করবেন না, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি করবেন না, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর যাদের সবচেয়ে বেশি হক রয়েছে, এই বিশ্ববিদ্যালয় কে শান্তিডাঙ্গা দুলালপুরের মাটিতে স্থাপন করতে গিয়ে, যারা নিজেদের ভিটে মাটি সর্বস্ব খুইয়েছে, সেই মানুষগুলোর ক্ষতি করবেন না। এই বিশ্ববিদ্যালয় ভালো চললে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন হলে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বৃদ্ধি হলে, এখানে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সারা দেশের মানুষের সাথে সাথে ওই এলাকার মানুষের আরও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। বাজার ঘাট যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে, তাদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে সুতরাং আমরা নিজেরা দলাদলি করে এই বিশ্ববিদ্যালয় টিকে পিছিয়ে দিয়ে, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করব এবং ওই এলাকার মানুষের ক্ষতি করব, সর্বোপরি ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষতি করব এটা কোন ভাবেই কাম্য হতে পারে না। একটু গভীরভাবে ভেবে, আমাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি আপনাদের চিন্তার খোরাকের জন্য বিবেকের বোধের স্থান থেকে, আজকের এই লিখাটি লিখলাম। ১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে এখনোও পর্যন্ত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি একই রকম মমত্ববোধ রয়েছে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে এমন কোন মাথা তোলা পরিবার নেই বিশেষ করে শেখপাড়া, শান্তিডাঙ্গা, মধুপুর, লক্ষ্মীপুর, বসন্তপুর, হরিনারায়নপুর, গাড়াগঞ্জ, যুগিপাড়া, বারাদি, বেরবারাদিদ, ঝাউদিয়া, বারুইপাড়া, শৈলকুপা, দুধসর, চরি আর বিল, ভাটই বাজার, ঝিনাইদহ- কুষ্টিয়া, কমবেশি সকল মুজিব আদর্শের পরিবারের বাড়িতেই আমার যাতায়াত ছিল এবং তাদের বাড়িতে রাত্রি যাপন করেছি অনেক খানাপিনা খেয়েছি আমি ব্যক্তিগতভাবে ওই অঞ্চলের মুজিব প্রেমি মানুষগুলোর কাছে ভীষণভাবে ঋণী। আপনাদেরই ভাই হিসেবে, বর্তমান সময়ে জাতীয় পর্যায়ের একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ হিসেবে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামের সাথে এখনো আমাদের সুনাম জড়িত। সুতরাং আমার এই লিখাটি হৃদয় দিয়ে, মস্তিষ্ক দিয়ে একটু অনুধাবনের চেষ্টা করবেন এবং পক্ষ অবলম্বন না করে মাননীয় সরকার বাহাদুর এর উপরে ছেড়ে দেন, অর্থাৎ সরকার বাহাদুর যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই আমাদের সকলের সিদ্ধান্ত।
|