নয়াদিল্লি: ভারতের বহুদিনের দাবির প্রেক্ষাপটে, ‘শিগগিরই’ নয়াদিল্লিকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকার সহযোগী প্রকাশনা বিজনেস লাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এজন্য বাংলাদেশ একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর’ তৈরি করছে, যার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতের সরাসরি প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হবে। এতে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো মজবুত হবে বলে আশা প্রকাশ করছে ভারত। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক বিজনেস লাইনকে বলেছেন, ‘আমরা আশাবাদী যে শিগগিরই চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতের সরাসরি প্রবেশাধিকারের বিষয়টি বাস্তবে রূপ নেবে। আমরা এই প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর’-সহ অন্যান্য দিকগুলো নিয়ে কাজ করছি।’ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে বিজনেস লাইনকে বলেছেন, ‘এই চুক্তির ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’ মঙ্গলবার ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সচিব অমরজিত সিংয়ের সঙ্গে আলাপকালে তিস্তা সহ পানি ব্যবস্থাপনার সব দিকগুলো নিয়ে কথা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম বন্দরের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি যৌথ কনসোর্টিয়াম তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন। বিজনেস লাইনের খবরে বলা হয়েছে, ভারত গত ৫ বছর যাবৎ চট্টগ্রাম বন্দরে সরাসরি প্রবেশাধিকার চেয়ে আসছে। এই প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হলে, ভারতের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরকে একটি ট্রানজিট হাব হিসেবে ব্যবহার করে বাংলাদেশ-সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সরাসরি পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈররি হবে। এতে ভারতের তাদের লাখ লাখ ডলার সাশ্রয় হবে। গত বছর জুনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে। শহিদুল হক বিজনেস লাইনকে জানিয়েছেন, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সমুদ্রে যৌথ অংশীদারত্ব তৈরির জন্যও কাজ করছে বাংলাদেশ-ভারত। ‘এটা যৌথ অংশীদারত্বের একটি নতুন এলাকা। এর সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখতে একটি যৌথ টাক্সফোর্স গঠন করা হয়েছে। মার্চের প্রথম সপ্তাহের প্রথম বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা হবে।’ ভারতীয় পররাষ্ট সচিব এস জয়শঙ্করের সঙ্গের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব। গত বছর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময় বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরে সমুদ্র সম্পদ (ব্লু ইকোনমি) এবং সমুদ্র সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে দুই দেশ। সেসময় দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শংকরের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক রবিবার দিল্লি গেছেন।