বাদাম চাষ করে লাভের স্বপ্ন বুনছে কাউনিয়ার চরাঞ্চলের কৃষকরা। তিস্তা ভাঙ্গাগড়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকা মানুষগুলো চরাঞ্চলে বাদাম চাষ করে স্বাবলম্বী হবার স্বপ্ন দেখছে। চলতি মৌসুমে বাদামের ফলন অনেকটা ভালো ও বাজারে দাম বেশি পাওয়ায় আশা কৃষকের। বাদামের সবুজপাতা হলুদ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার আরাজি হরিশ্বর, গুপিডাঙ্গা, প্রাননাথ চর, নাজিরদহ চর, পল্লীমারী চর, গদাইর চর, চর গনাই, হরিচরন শর্মা, ঢুসমারা চর, হয়বৎখাঁ, বিশ্বনাথসহ তিস্তা নদী বেষ্টিত গ্রামসহ চরগুলো ঘুরে দেখা গেছে দিগন্ত জুড়ে বাদাম আর বাদাম ক্ষেত। চলতি মৌসুমে বাদামের ফলন অনেকটা ভালো ও বাজারে দাম বেশি পাওয়ায় আশা কৃষকের। কৃষি বিভাগের সূত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে বাদাম চাষ উপজেলায় লক্ষমাত্রা ছিল ৭৩০, চাষ হয়েছে ৮১৫ হেক্টর জমিতে। চরাঞ্চলে বেশির ভাগ বিনা-৪ বারি ৬-৮-৯ এর চাষ হয়। তিস্তা সড়ক সেতুর নিচে বাদাম চাষি এরশাদ হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে সে ৫০ শতক জমিতে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ও পরামর্শে বাদাম চাষ করেছে। বিশ^নাথ গ্রামের বাদাম চাষী আব্দুল বাকী ৪০ দোন, গোলাম মোস্তফা ১৫ দোন, বছির উদ্দিন ৬০ দোন নিজপাড়ার খয়বর মোফাজ্জল পাঞ্জর ভাঙ্গার পুস্পেন্দ্র, হরেন, সুবোদ ও দিনেশ সাথে কথা বলে জানাগেছে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনা-৪ জাতের বীজ নিয়ে রোপন করেছে। তাদের আশা যদি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে না যায় লাভের মুখ দেখবো। বর্তমানে বাদাম ৪০০০ থেকে ৪২০০ টাকা মণ দরে বিক্রয় হচ্ছে। সকলে খরচ বাদ দিয়ে এ মৌসুমে বাদামে লাভের আশা করছে। কিন্তু তিস্তায় হঠাৎ পানি বাড়লে তাদের স্বপ্ন ভেসে যেতে পারে। ঢুষমারা চরের বাদাম চাষী আসাদুল জানান ২৪ দোন জমিতে বাদাম চাষ করেছে, যদি নদীতে হঠাৎ পানি না হয় তবে ভাল ফলন ও দাম পাওয়ার আশা করছে। বালাপাড়া ইউপি চেয়াম্যান আনছার আলী ও মধুপুর ইপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন দুটি তিস্তা নদী বেষ্টিত। ফলে বেশিরভাগ এলাকা নদীগর্ভে। নদীতে চর জেগে উঠায় নদী পাড়ের মানুষগুলো বাদাম চাষ করছে। চাষিদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া হলে তারা বাদাম চাষে আরও আগ্রহী হবে। কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন জানান, চলতি মৌসুমে ৮১৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। বাদামের বাম্পার ফলনের আশা করছি। কৃষকরা বাদাম চাষে লাভবান হওয়ায় বাদাম চাষের পরিমাণ বাড়ছে। কৃষি বিভাগ বাদাম চাষিদের প্রতিবছর বিনামূল্যে বীজ ও পরামর্শে দিয়ে সহায়তা করে আসছে।