কাউনিয়ায় তিস্তার চরে এখনও মরিচের সমারোহ। ফলন ভালো, দামও বেশী। তাই গ্রাহকের কাছে মরিচের ঝাল বাড়লেও কৃষক কৃষাণীর ঘরে হাসি ফুটেছে। চরাঞ্চচলের চাষিরা বলছে মরিচ চাষে তাদেও ভাগ্য বদলে দিচ্ছে।
সরেজমিনে কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্ঠিত ২৯টি চর ঘুরে দেখা গেছে মরিচ ক্ষেতের ঘণ সবুজে ঘেরা। চারিদিকে জমি গুলোতে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের কাঁচা পাকা মরিচ। গত তিন বছর ধরে কাঁচা মরিচের ভালো দাম পেয়েছে কৃষকরা। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে কাউনিয়ার মরিচ যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। বর্তমানে বৃষ্টির ফলে মরিচ ক্ষেতের কিছুটা ক্ষতি হলেও এবার আবহাওয়া অনুক‚ল থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানায় কৃষকরা। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায় গত বছরের চেয়ে এ বছর ৮৫ হেক্টর বেশি জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪১০ হেক্টর কিন্তু চাষ হয়েছে ৪৪৫ হেক্টর জমিতে। অধিকাংশ মরিচ ক্ষেতই হলো তিস্তা নদীর জেগে ওঠা চরে। তিস্তা নদীর কোল ঘেষা চরে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তিস্তার চরাঞ্চলে পলি ও উর্বর দোআঁশ মাটিতে ফলন ভালো ও অধিক দাম পাওয়ায় চাষীরা বেজায় খুশী। চর আরাজী হরিশ^র এলাকার কৃষক সোহরাব জানান বর্তমানে প্রতি কেজি মরিচের দাম ৭০ টাকা থেকে ৯০ টাকা হওয়ায ভালো লাভ হচ্ছে, তিনি জানান ৩৬ শতক জমিত মরিচ চাষ করে খরচ হইছে ১৬ হাজার টাকা আর মচির বিক্রি করেছে ৪৬ হাজার টাকা। একই কথা জানালেন গদাই গ্রামের আলামিন, রবিউল ও আঃ বাকি। তারা জানান ‘তিস্তার চরে মরিচ চাষ কওে তাদেও ভাগ্য বদলে গেছে। প্রানাথ চরের কৃষক কোরবান আলী জানান, তাদের ক্ষেতের উৎপাদিত মরিচ স্থানীয় হাট-বাজারের চাহিদা মিটিয়ে জেলা শহর থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত রফতানি হচ্ছে। উপজেলার ভায়ের হাট, খানসামা হাট, টেপামধুপুর হাট এবং তপিকল হাট ঘুরে দেখা গেছে অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি দেদারছে কেনাবেচা হচ্ছে মরিচ। তকিপল হাটের আড়ৎদার হাফিজার মেম্বার জানান, চলতি মৌসুমে মরিচ চাষিরা অনেক ভাল দামে মরিচ বিক্রি করেছে। তার আড়ৎ থেকে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, বগুড়া সহ বিভিন্ন জেলার পাইকার এসে প্রতিদিন প্রায় ২০০মন মরিচ নিয়ে যায়। একমাস আগেও মরিচ ৪০০০ টাকা মন দুওে বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে বাজার একটু নি¤œ মূখি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহনাজ পারভীন জানান আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষকদের সার্বক্ষনিক ট্যাকনিক্যাল পরামর্শ দেয়ায় চলতি মৌসুমে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ছাড়াও তিস্তার জেগে ওঠা চরের জমিতে প্রচুর পলি পড়ায় এলাকার মাটির প্রকৃতি ও আবহাওয়া মরিচ চাষের জন্য উপযোগী।