আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল। বর্ষা মৌসুমে আমন ধান রোপনের উপযুক্ত সময়। ভরা বর্ষা মৌসুমে কাউনিয়া উপজেলায় বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়া ও টানা খরার কবলে পড়ে আমন ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। আমন ক্ষেত রক্ষায় কৃষকেরা সম্পুুরক সেচ দিয়ে ফসল রক্ষার জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সম্পুরক সেচ প্রদানে অতিরিক্ত খরচে কৃষকের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থার। ফলে আমন চাষের লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশংকা করছে স্থানীয় চাষিরা।
সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি বছর আষাঢ়-শ্রাবণ মাসেই বৃষ্টির পানিতে আমন চারারোপণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন কৃষকরা। এবার দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে পানি সঙ্কট চরম আকার ধারন করেছে। পানির অভাবে কৃষকরা চারারোপণ করতে পারছেন না। বৃষ্টি না থাকায় মাঠের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে আমন চাষীদের সেচ পাম্পের পানিই এখন একমাত্র ভরসা। এতে কৃষকদের আমন চাষে অনেক খরচ বাড়বে। আমন চারা রোপনের সময় জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ড্রেন নির্মান না করায় অনেক কৃষক বিপাকে পড়েছে। উপজেলার শিবু গ্রামের কৃষক হাফিজ উদ্দিন বলেন শ্রাবণ মাসের ৩য় সপ্তাহ পার হয়ে যাচ্ছে পানির অভাবে জমিতে ধান লাগাতে পারছি না, বাধ্য হয়ে সেচের ব্যবস্থা করে জমি লাগাতে হবে। রাজিব গ্রামের কৃষক মহসিন আলী, জানান আকাশে মেঘ জমলেও প্রায় চার সপ্তাহ ধরে বৃষ্টির দেখা নাই। বৃষ্ঠি হয় হয় করেও এক সপ্তাহ দেখার পর ক্ষেতে শ্যালো বসিয়ে পানি দিচ্ছি। ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাকে হিমশিম ক্ষেতে হচ্ছে। নি¤œ মধ্যবিত্ত কৃষকেরা ১শ টাকা ঘন্টা দরে সেচের পানি ক্রয় করে জমিতে পানি দিতে গিয়ে আর্থিক ভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে। গদাই গ্রামের কৃষক গফুর আলী জানায় প্রতি দিন চাতক পাখির মতো আকাশ পানে চেয়ে আছি পানির জন্য কিন্তু বৃষ্টির দেখা নাই। আকাশে মেঘ জমে একটু বৃষ্টি পরতে ধরে বন্ধ হয়ে যায়। এর পর শুরু হয় ভ্যাপসা গরম। এ ছাড়াও অনেক এলাকায় আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানিয়ে মোনাজাত করছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন বলেন, উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ১১হাজার ৪শ ৫৮ হেক্টর জমিতে। বন্যা ও কিছুবৃষ্টির পর কৃষকেরা প্রানপন চেষ্টা করে আমন রোপন শুরু করে কিন্তু বর্তমানে খরা ও অনা বৃষ্টির কারনে এ পর্যন্ত ৬হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আমন চারা রোপন করা হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় আমরা আমন ক্ষেতে সম্পুরক সেচ দিতে পরামর্শ প্রদান করছে। বরেন্দ্র প্রকল্পের ২৫টি গভীর নলকূপ ও ২৫০২টি অগভীর নলকূপ চালু রেখে কৃষকেরা জমিতে সম্পুরক সেচ প্রদান করে ক্ষেত রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে। আগামী ২৫ আগষ্ঠ পর্যন্ত আমন রোপন স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। লক্ষ্য মাত্রাও অর্জন হবে বলে তিনি আশা করছেন।