রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কৃষকরা ধান, মাছ ও সবজি সহ বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি কলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে। কম খরচে বেশী লাভের আশায় কলা চাষ দিন দিন এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ফলে অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছল হচ্ছেন চাষিরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে জানা গেছে,এই উপজেলার মাটি দোআঁশ ও বেলে দোঁআশ হওয়ায় কৃষকরা চাষাবাদের ক্ষেত্রে ধান চাষকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। খোপাতি ও হলদীবাড়ি সহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা পুরনো ধ্যান-ধারণা পাল্টে লাভজনক ফসল হিসেবে কলা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। উপজেলায় বাণিজ্যিক ভাবে কলার বাগান ছিল না। কিন্তু খোপাতি ও হলদীবাড়ি গ্রামে এখন বাণিজ্যিক ভাবে কলার বাগান করার উদ্যোগ নিয়েছে অনেক কৃষক। তবে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এখনো জমির আঁইলে, পুকুর পাড়ে, বাঁশঝাড়ে বিচিকলা, সবরি কলা, চাম্পা কলা, সাগর কলাসহ বিভিন্ন জাতের কলা চাষ করছে। এলাকার একাধিক কলা চাষীরা জানান, চলতি খরিপ-১ মৌসুমে ভাইরাসজনিত রোগবালাই ও মৌসুমি ঝড়ে অনেক কলা চাষির কলা নষ্ট হলেও কৃষি বিভাগ থেকে কোন সহযোগিতা পায়নি। তবে এখন যে কলার বাগান রয়েছে তাতে ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। একই সঙ্গে দামও গত বারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ পাচ্ছে। উপজেলার খোপাতি, হলদীবাড়িসহ বিভিন্ন গ্রামে কলার চাষ হচ্ছে। কলা চাষ করে উপজেলার অনেক কৃষক সাবলম্বী হচ্ছে। খোপাতি গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, ৭৫ শতক জমিতে ৯০০ সাগর কলা গাছ রোপন করেছে, তার চাষ থেকে শুরু করে সব কিছু মিলে প্রতিটি কলা গাছে খরচ হয়েছে ৮০ টাকা, সে ৯০০ কলার ছড়ি বিক্রি করেছে ৩লাখ ২৫ হাজার টাকা। প্রতিটি গাছে তার লাভ হয়েছে ২৮০ টাকা করে। একই কথা জানালেন কলা চাষি নজরুল ইসলাম, তারাজুল ইসলাম,শহিদার তারাও কলার বাম্পার ফলন ও ভাল দাম পাবে বলে আশা করছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন জানান, উপজেলায় কলা চাষে ভাল ফলন ও দাম পাওয়ায় কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। বর্তমানে উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে কলা চাষ করা হয়েছে। কলা চাষের পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, একই জমিতে কলা চাষের ফাঁকে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা যায় এবং কৃষকরা যেন বেশ লাভবান হয় সে ব্যাপারে কৃষি বিভাগ সর্বাত্বক চেষ্টা কওে যাচ্ছে।