“তনু ধর্ষিত নাও হয়ে থাকতে পারে” পুলিশের এই ধরনের কথায় কাউকে কাউকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখলাম! তাদের ভাব দেখে মনে হচ্ছে তনু ধর্ষিত না হলে তার হত্যা অনেকটাই হালকা হয়ে যায়! তাই যে করেই হোক তনু ধর্ষিত হয়েছে এটা প্রমান করতেই হবে! তাদের কাছে প্রশ্ন, ভিসেরা রিপোর্ট পড়ে দেখেছেন? সেখানে কি ধর্ষনের কোন আলামত রয়েছে? আজকে তনুর বাবা মিডিয়াতে তার মেয়ে ধর্ষিত হয়নি বলে জানিয়েছেন, সেটা কি শুনেছেন? নাকি এখনও নামধারী মিডিয়ার মিথ্যা গলাটাকা তত্ত্ব বা জামা ছিড়ে ধর্ষন তত্ত্ব প্রচার করতে থাকবেন?
বিদেশী মেয়ের ছবিকে তনু বলে চালিয়ে দিতে আপনাদের রুচিতে বাধে নাই। তনু ধর্ষিত হয়নি, এমন কথা শুনে আপনার নিশ্চই মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে! কারন, ফেক ছবি দিয়ে তনুকে ধর্ষনের যে পারসেপশন তৈরী করা হয়েছে সেটা থেকে নিজেকে কিছুতেই বের করতে পারছেন না। আপনার নিজের বোন হলে পারতেন এমন ছবি প্রচার করতে? বিবেক কী বলে? তনুকে হত্যা করা হয়েছে তার বিচার চাই। কিন্তু, না জেনে ধর্ষিত হয়েছে বলে তার আরেক দফা ধর্ষন চাই না। এই ধর্ষন বন্ধ কর।
এদিকে তনুর মরদেহ উদ্ধারের একদিন পর থেকেই তার প্রতিবেশী এক যুবককে বাসায় পাওয়া যাচ্ছে না। এই যুবক তনুকে উত্ত্যক্ত করত বলে তার খালাতো বোন নাইজু এর আগে জানিয়েছিলেন। বর্তমানে এই যুবক কোথায়, তা জানা যাচ্ছে না। অনেকের ধারণা, সে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারও হাতে আটক রয়েছে। অবশ্য পুলিশ কিংবা র্যাবের দায়িত্বশীল কেউই তাকে আটকের কথা স্বীকার করেনি।
তনুকে ধর্ষন করা হয়নিঃ তনুর বাবা ইয়ার হোসেন।
তনুকে ধর্ষন করা হয়নি বলে মনে করেন তার বাবা ইয়ার হোসেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি যখন প্রথম তনুর লাশটি দেখতে পাই তখন তার কাপড় ছিল স্বাভাবিক। মনে হয়েছে কেউ তাকে শুইয়ে রেখেছে। তখন তনুর চোখ ছিল খোলা ও লাল। আর নাক ও মাথার পেছনে ছিল থেতলানো। পাশে পড়ে থাকা উড়না ছিল ভেজা।”
অনলাইনে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি ভুয়া ছবিকে তনুর লাশের ছবি বলে চালিয়ে দিয়েছে কতিপয় দুষ্কৃতিকারী। ঐসব ভুয়া ছবিতে বিভিন্ন মেয়ের রক্তাক্ত ছবি উপস্থাপন করে পাব্লিক সেম্পেথি আদায় করে সেনাবাহিনীর উপরে জনগনকে ক্ষেপিয়ে তোলাটাই একমাত্র উদ্দেশ্য বলে মনে করেন বিশিষ্ট অপরাধ বিজ্ঞানীর কয়েকজন।
তনুর লাশের আসল ছবি পর্যবেক্ষন করে দেখা গেছে মৃত্যুর সময় তার পরনে ছিল প্লাজো টাইপ পায়জামা এবং একটি ফতুয়া। তার জামার কোথাও কোন ছেঁড়া কিংবা ধস্তাধস্তির আলামত পাওয়া যায়নি। তবে সুরতহাল প্রতিবেদনে কানের কাছে, নাকে এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
ময়না তদন্তের রিপোর্টেও তনুর ধর্ষনের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। সব দিক হিসেব করে এটা অনেকটাই নিশ্চিত যে খুনিরা তনুকে ধর্ষন করেনি। তাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল কিংবা পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
তনু শেষ ফোনকল ট্র্যাক করে জানা গেছে, তিনি শেষ কথা বলেছিলেন ঢাকায় অবস্থিত তার এক বন্ধুর সাথে যার নাম কাউসার।
একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, তনুর হত্যাকারী ইতিমধ্যেই সনাক্ত করা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কয়েকজনকে পর্যবেক্ষনে রেখেছে। অচিরেই তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে সূত্র।