নিজাম উদ্দিন আহমেদঃ ঢাকার পাশ্ববর্তী শিল্পাঞ্চল খ্যাত রূপগঞ্জ। নারায়ণগঞ্জ জেলায় এ উপজেলাটির অবস্থান। এটি একটি জনবহুল এলাকা এবং এখানে রয়েছে নানা সমস্যা ও সম্ভাবনা। দেশব্যাপী করোনার ভয়াল থাবা শুরু হয়েছে তার মধ্যে হটস্পট হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ। করোনা সমস্যার সমাধান এবং সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রশাসনের প্রধান তিন নারী কর্তা ব্যক্তি। রূপগঞ্জে করোনা যুদ্ধের সফল কর্তা ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফিফা খাঁন ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফারজানা আক্তার।
রূপগঞ্জে সফল করোনা যোদ্ধা হিসেবে মাঠে সক্রিয় হয়ে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের টেস্ট নিশ্চিত করা, আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলোশনে রাখা, রোগীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা, তাদের পরিবার বাড়ি লকডাউন এবং আক্রান্তের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া, ত্রাণ বিতরণসহ সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বেশ সফলতার সাথে কাজ পরিচালনা করছেন তারা। পাশাপাশি নিজের বেতন ও বোনাসের টাকা করোনা ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য দান করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী আফিসার (ইউএনও) মমতাজ বেগম।
মোবাইল কোট পরিচালনা, বাজার এর দোকানদারদের মাল ন্যায্য মূল্যে বিক্রি নিশ্চিত করা, সাধারন মানুষকে সচেতন করা, গাউছিয়া মার্কেটের সামনে ঢাকা সিলেট-মহাসড়কে ৩ যুগ দখলে থাকা ফুটপাত উচ্ছেদ এর কাজটি করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফিফা খাঁন। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে গিয়ে নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন কোয়ারেন্টিনে থেকেছেন। অবশেষে করোনা যুদ্ধে জয়ী হয়ে আবারও মাঠে নেমেছেন তিনি। দেশের ক্রান্তিকালে নারী হয়েও এই তিনজনই রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ছুটে গিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সমস্যার সমাধান করে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তাদের এ দায়িত্ব পালনে মুগ্ধ রূপগঞ্জবাসী।
করোনাভাইরাস একটি ছোঁয়াচে রোগ। এই ভাইরাস দ্রুত একজনের শরীর থেকে অন্য জনের শরীরে প্রবেশ করে। এ রোগের কোনো ওষুধ এখন পর্যন্ত আবিস্কার হয়নি। সারা বিশ্বে অর্ধ কোটিরও উপরে মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। মারা গেছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ। এমন অবস্থায় সেই অদৃশ্য দানব করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনেরে এই তিনজন কর্তাব্যক্তি সারাদিন বিভিন্ন স্থানে ছুটে বেড়াচ্ছেন। তাদের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় নেই কোনো ত্রুটি। এছাড়া জনপ্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শ করে তারা ত্রাণসামগ্রী বিতরণ, ঈদে জনসমাগম এড়াতে রূপগঞ্জে আবস্থান নিয়ে জনস্বার্থে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। রূপগঞ্জে মসজিদের বাইরে কোনো ঈদের জামাত হতে দেয়নি তারা। আগে থেকেই উপজেলা প্রশাাসন কঠোর অবস্থানে থাকায় রূপগঞ্জে কোথায় কোন ঈদগাহ মাঠে নামাজ আদায় হয়নি।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মমতাজ বেগম বলেন, সকলের সহযোগিতা ছাড়া করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব না। তাই সরকারি সকল নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি। পাশাপাশি সকলকে নিজ গৃহে অবস্থান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফিফা খাঁন বলেন, রূপগঞ্জবাসীর প্রতি অনুরোধ থাকবে বিনা কারণে যেনো কেউ ঘর থেকে বের না হয়। জীবনে বেঁচে থাকলে বহু ঈদ পাওয়া যাবে তখন আনন্দ হবে। এখন দেশের ক্রান্তিকালে আনন্দ নয়।