জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া পলাতক ৫ খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তবে বন্দী বিনিময় চুক্তি না থাকায় ৫ খুনির সম্ভাব্য অবস্থান জানার পরও তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা সমস্যা দেখা দিয়েছে। ১৯৯৭ সাল থেকে পলাতক খুনিদের মধ্যে কেবল ব্যাংকক থেকে আসামি বজলুর হুদাকে আইনি পক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলেও বাকি ৫ আসামিকে ফিরিয়ে আনার পথ রুদ্ধ হয়ে আছে বন্দী বিনিময় চুক্তি না থাকার কারণে। আত্মস্বীকৃত আরেক খুনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত নুর চৌধুরীর যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় হারালে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্য ৪ খুনিকে আইনি প্রক্রিয়ায় দেশে আনা যাবে কিনা তা অনিশ্চিত থেকেই যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত পলাতক ৬ খুনির মধ্যে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া আবদুল মাজেদ গোপনে দেশে ফেরার পর গ্রেফতার হন। পরে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু হত্যার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক খুনি এসএইচএমবি নূর চৌধুরীর অবস্থান জানার জন্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করে তার সম্ভাব্য অবস্থান কানাডা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি লে. কর্নেল এএম রাশেদ চৌধুরীর সম্ভাব্য অবস্থান আমেরিকায়। আরেক খুনি পলাতক লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিম ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তন করছে। তার অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব না হলেও পাকিস্তান বা লিবিয়ায় অবস্থান করছে বলে ধারণা করা হয়। লে. কর্নেল খন্দকার আবদুর রশিদের অবস্থান শনাক্ত না হলেও তারও সম্ভাব্য অবস্থান লিবিয়া ও জিম্বাবুয়ে বলে জানা গেছে। রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে সম্ভাব্য অবস্থান ভারত বা পাকিস্তান বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুকে নিজ পরিবারে হত্যা মামলায় এখনো যে ৫ খুনি বিভিন্ন দেশে আত্মগোপনে রয়েছেন তাদের গ্রেফতারের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে জোর তৎপড়তা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ সদর দফতরের ইন্টারপোল শাখা। আত্মস্বীকৃত ওই ৫ খুনিকে গ্রেফতারে পুলিশ সদর দফতরের ইন্টারপোল শাখা থেকে সম্প্রতি ১৯৩টি দেশের ইন্টারপোল শাখার সঙ্গে যোগাযোগ করে জারি করা রেড নোটিশ রিভিউ করা হয়েছে। তবে বন্দী বিনিময় চুক্তি না থাকায় আত্মস্বীকৃতি খুনিদের ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। ৫ খুনির সর্বশেষ অবস্থানের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশের অসহযোগিতার কারণে ৪ খুনির অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে ৫ খুনির মধ্যে দু’জনের অবস্থান পাকিস্তানে থাকতে পারে। কিন্তু কূটনৈতিক তৎপরতার দুর্বল অবস্থানের কারণে পুলিশ সদর দফতরের সব চেষ্টা বার বার বিফলে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের ইন্টারপোল শাখার এআইজি মহিউল ইসলাম জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ৫ খুনির মধ্যে কে কোথায় রয়েছে তা নিশ্চিত হতে বাংলাদেশ পুলিশের সদর দফতরের ইন্টারপোল শাখা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করেছে। ২০১৯ সালে নতুন করে ১৯৪টি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের ইন্টারপোল শাখা আন্তরিকতা দিয়ে খুনিদের ফেরার বিষয়ে আইনি বাধাগুলো পর্যালোচনা করে যাচ্ছে।
এআইজি মহিউল ইসলাম জানান, ৫ খুনিকে গ্রেফতারে সহযোগিতা চেয়ে ২০০৯ সাল থেকে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে। গত বছর রেড নোটিশ দু’বার রিভিউ করা হয়েছে সফলভাবে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও কাজ করছে। আমরা ৫ খুনিকে ফিরিয়ে আনার জন্য সবদিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। পুলিশ সদর দফতরের এ বিষয়ে আন্তরিকতার অভাব নেই।
পুলিশ সদর দফতরের এনসিবি (ইন্টারপোল) শাখা সূত্রে জানা গেছে, আত্মস্বীকৃত খুনি নুর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী, রিসলাদার মোসলেউদ্দিন, আবদুর রশিদ, শফিকুল হক ডালিমের অবস্থান কোথায় রয়েছে তা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে ১৯৪টি দেশের সঙ্গে যোাগযোগ করা হয়েছে ইন্টারপোলের মাধ্যমে। এর মধ্যে ভারতসহ কয়েকটি দেশ থেকে বলা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কেউ তাদের দেশে নেই। কিন্তু ভারতের কলকাতায় ভিন্ন পরিচয়ে আত্মগোপনে ছিল সদ্য ফাঁসি কার্যকর হওয়া খুনি ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদর (বহিষ্কৃত)। পরে কলকাতা থেকে অতি গোপনে দেশে ফিরে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া মাজেদকে গ্রেফতার করে ফাঁসি কার্যকর করা হয়। অন্যদিকে, বার বার যোগাযোগ করা সত্ত্বেও পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশ থেকে কোন রেসপন্স পাওয়া যায়নি।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টার পর নুর চৌধুরীর অবস্থান কানাডায় এবং রাশেদ চৌধুরীর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত রাশেদ চৌধুরী রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন আইনের কারণে রাশেদ চৌধুরী রাজনৈতিক আশ্রয় হারাতে পারেন। যদিও রাশেদ চৌধুরী রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে দেশটির আদালতে আইনজীবী নিয়োগ করেছে। তবে তার রাজনৈতিক আশ্রয় হারানোর সম্ভবনা রয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। তাকে ফিরিয়ে আনার একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে রিসালাদার মোসলেউদ্দিন পাকিস্তান অথবা ইন্ডিয়ায় রয়েছে বলে তথ্য ছিল। যোগাযোগের পর ইন্ডিয়া সরকার জানিয়েছে মোসলেউদ্দিন তাদের দেশের নেই। কিন্তু পাকিস্তান রেসপন্স করেনি। আবদুর রশিদের সম্ভাব্য অবস্থান ফ্রান্স, ইতালি, লিবিয়া, থাইল্যান্ড অথবা ইউকে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শফিকুল ইসলাম ডালিমের অবস্থান চায়না, ইউকে, কেনিয়া লিবিয়া অথবা থাইল্যান্ডে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব দেশের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুরও তার পরিবারকে হত্যার সঙ্গে জড়িত খুনিদের মধ্যে যারা বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গিয়েছিল তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আইনমন্ত্রীকে প্রধান করে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছিল সরকার। সেই ট্রাস্কফোর্সে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ ট্রাস্কফোর্সের সদস্য। মূলত পুলিশ সদর দফতরের ইন্টারপোল শাখার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে কে কোথায় অবস্থান করছে এর তথ্য বের করার পর তা ট্রাস্কফোর্সকে জানানো হয়েছে। ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানার নথিও পৌঁছে দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশের পুলিশের কাছে। এ বিষয়ে এখন ট্রাস্কফোর্স কাজ করছে। এখন তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি গঠিত ট্রাস্কফোর্সই তদারকি করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় পলাতক বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে উভয় দেশে ‘ল ফার্ম’ নিয়োগ করা হয়েছে ।
২০১০ সালের ২৮ মার্চ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীকে সভাপতি করে এ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়।২০১৪ সালের জানুয়ারিতে বর্তমান সরকার নতুনভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ওই টাস্কফোর্সটি পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে একাধিক সভায় মিলিত হয়েছে এবং জাতির পিতার হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিদের ইতোমধ্যে স্থাবর সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব জব্দের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাজাপ্রাপ্ত খুনিদের ছবি সম্বলিত তথ্য প্রেরণপূর্বক তাদের অবস্থান চিহ্নিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, রাশেদ চৌধুরীর বিষয়ে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটন সফরের সময় অনুরোধ জানান তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এর তিন মাস পর, অর্থাৎ ২৭ মে মার্কিন আইনি পরামর্শক সংস্থা স্কাডেন এলএলপিকে রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরত আনার কাজে যুক্ত করা হয়। সংস্থাটির পক্ষে মামলার তদারক করছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাবেক আইনি পরামর্শক গ্রেগরি ক্রেইগ। এরপর বিষয়টি নিয়ে তারা বিস্তারিত আলোচনা করেছেন মার্কিন অ্যাটর্নি জন স্টুয়ার্ট ব্রুসের সঙ্গে। পাকিস্তানে পলাতক এক খুনির বিষয়ে জানতেও পাকিস্তান দূতাবাসকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িতে বঙ্গবন্ধুকে নিজ পরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল বিপথগামী উচ্ছৃঙ্খল খুনি সেনাসদস্যরা। ইতিহাসের সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও বর্বরোচিত এই হত্যাযজ্ঞ চালায়। সেদিন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রাণ হারান সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ রোজী জামাল, ভাই শেখ নাসের, ও কর্নেল জামিল। ইতিহাসের এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে সেদিন আরও প্রাণ দিয়েছিলেন শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, ভগ্নিপতি আবদুল রব সেরনিয়াবাত, শহীদ সেরনিয়াবাত, শিশু বাবু, আরিফ রিন্টু খানসহ অনেকে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। বঙ্গবন্ধুর তদানীন্তন এপিএস মহিতুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। সিআইডির তৎকালীন এএসপি আবদুল কাহার আকন্দ মামলাটি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট (নং ৭) দাখিল করেন ১৯৯৭ সালের ১৫ জানুয়ারি। চার্জশিটে ২০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে ১১ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন জজ কোর্ট থেকে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায়ে ১৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ আসামিকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর উচ্চ আদালত থেকে ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৩ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২০১০ সালে ২৮ জানুয়ারি ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড (ফাঁসি কার্যকর) করা হয়। ২০০১ সালে এক আসামি জিম্বাবুয়েতে মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানা যায়। ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল রেডনোটিশধারী আসামি লে. আবদুল মাজেদ করোনার কারণে ভারতের কলকাতায় আত্মগোপনে থাকার পর দেশে ফিরলে ফাঁসি কার্যকর হয়।
এর আগে ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বরে, পলাতক খুনিদের গ্রেফতারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করা হয়। এরআগে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবার পর ’বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করা যাবে না’ মর্মে তৎকালীন সরকারের ’ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স’ জাতীয় সংসদের মাধ্যমে বাতিল করে এই খুনিদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে। গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা ৫ আসামির ফাঁসির দণ্ডাদেশ কার্যকরে আপিল বিভাগের ’ক্লিয়ারেন্স’ নিশ্চিত হয়ে গেলে আসামিদের শেষ আইনি আশ্রয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়। দণ্ডাদেশ কার্যকর হওয়া আসামিরা হচ্ছে- সাবেক লে. কর্নেল ফারুক রহমান, মহিউদ্দিন আহমেদ (অর্টিলারি), শাহরিয়ার রশিদ খান, একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার) এবং সাবেক মেজর বজলুল হুদা। বজলুল হুদাকে থাইল্যান্ডের সঙ্গে বন্দী বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে সরকার ব্যাংকক থেকে এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাবেক লে. কর্নেল একেএম মহিউদ্দিন আহমেদকে (ল্যান্সার) দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদ্য অবসর নেয়া সিআইডি এডিশনাল ডিআইজি আবদুল কাহার আকন্দ জানিয়েছেন, ঘটনার ২১ বছর পর হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার পর বিভিন্ন সরকারের আমলে অনেক আলামত নষ্ট করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও দীর্ঘ সময় পর অক্লান্ত পরিশ্রম করে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ১শ’ দিনের মধ্যে মামলা তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল। মামলা তদন্ত করতে গিয়ে খোদ তদন্তকারী কর্মকর্তা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছিল। এরপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসামি বজলুল হুদাকে ব্যাংকক থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, খুনিদের দেশে ফেরাতে রাষ্ট্রীয় এবং আইন অনুযায়ী প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে খুনি রাশেদকে মুজিববর্ষের মধ্যেই ফেরত আনার আইনি প্রক্রিয়া চলছে। কানাডা সরকারের সঙ্গে নূর চৌধুরীকে কীভাবে আনা যায়—সে বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। অবস্থান নিশ্চিত হলেই তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, রিসালদার মোসলেম উদ্দিন (অব.) ভারতে আটক থাকলেও আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি।