বিয়ের আগে থেকে আদেশ চন্দ্র দেবনাথকে ভাল বাসত ললিতা রানী। এছাড়াও স্থানীয় বেশ কয়েকজন ছেলের সাথে প্রেম বিনিময় করত সুন্দরী ললিতা। এরই এক পর্যায় ললিতার বাবা মা গোপনে স্বজনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে এক বছর আগে প্রতিবেশি নির্মাণ শ্রমিক উত্তম কুমারের সাথে বিয়ে দেয়। স্বামীকে পছন্দ না করায় ঘর সংসারের পাশাপাশি আদেশের সাথে গোপনে প্রেমলিলা চালিয়ে আসছিল ললিতা। আদেশ ললিতার কাকাতো ভাই এবং সুন্দরগঞ্জ আব্দুল মজিদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনির ছাত্র। ঘটনার দিন গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বাড়ি সংলগ্ন হরিসভা শুনে বাড়িতে আসে ললিতা । এ সময় বাড়িতে পরিবারে অন্য কোন সদস্য ছিল না। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রেমলিলা চালায় আদেশ ও ললিতা। এ সময় উত্তম বাড়িতে আসলে ললিতা প্রেমিক আদেশকে খাঁটের নিচে রেখে দিয়ে স্বামীর সেবা করতে থাকে। এক পর্যায় কানামাছি খেলার কথা বলে স্বামীর হাত, পা এবং চোখ বেঁধে ফেলে স্ত্রী। এরপর কুড়াল দিয়ে স্বামীকে কোঁপাতে থাকে স্ত্রী। উত্তম খাটের উপর থেকে মেঝেতে পড়ে গেলে আদেশ খাটের নিজ বের হয়ে এসে চাকু দিয়ে গলাকেটে মুত্যু নিশ্চিত করে। এরপর উত্তমের হাত পা বাধা রশিদিয়ে ললিতাকে বেধে রেখে বাহির থেকে ঘরের দরজা আটকিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় আদেশ এবং যাওয়ার সময় পুকুরে হত্যাকান্ডের আলামত চাকু, কুড়াল এবং বেকি ফেলে দেয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ললিতার তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার দিবাগত রাত ৪টায় আদেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং বৃহস্পতিবার পুকুর থেকে হতাকান্ডের আলামত উদ্ধার করে। উত্তমের স্ত্রী ললিতা রানী (১৪) এবং তার প্রেমিক প্রতিবেশী সম্ভু চন্দ্র সরকারের ছেলে অদেশ চন্দ্র দেবনাথ (১৪) বর্তমানে জেল হাজতে। উত্তমের পারিবারিক সুত্রে জানা প্রায় রাতেই স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে মন কষাকষি চলছিল। স্ত্রীর বয়স স্বামীর বয়সের অর্ধেক হওয়ায় চাপ সইতে পারত না স্ত্রী।
থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহিল জামান জানান, প্রেম ঘটিত কারণে হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে। বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তমের স্ত্রী ললিতা রানীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর হত্যাকান্ডের রহস্য বের হয়ে আসে।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৬টার সময় পৌর সভার ৬নং ওয়াডের তাঁতীপাড়া মহল্লার রাজমিস্ত্রী উত্তম কুমারকে (৩০) তার নিজ শয়ন ঘরে হত্যা করে পালিয়ে যায় হত্যাকারি। উত্তম ওই মহল্লার নিবারণ চন্দ্রের ছেলে। দীর্ঘ এক বছর পূর্বে প্রতিবেশি সুকুল চন্দ্রের কন্যা ললিতা রানীর সাথে উত্তমের বিয়ে হয়।