গৌরব, প্রেরণা আর অহংকারের অমর একুশে ফেব্রুয়ারি শুভেচ্ছা
20, February, 2021, 2:38:49:AM
রাজু আহমেদ নন্দীগ্রাম বগুড়া প্রতিনিধি রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ মহান শহীদ দিবস, অমর ২১ শে ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার। একই সঙ্গে দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এ দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল রফিক, সালাম, বরকত, সফিউর, জব্বাররা। তাদের রক্তে শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছিল দুঃখিনী বর্ণমালা, আমাদের মায়ের ভাষা। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সূচনা সেদিন ঘটেছিল, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির কাছে অন্তহীন প্রেরণার প্রতীক বাঙালি তরুণদের সেদিনের আত্মদান শুধু ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। তারপর থেকে তা একটি গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার স্বপ্ন ও অঙ্গীকারে দানা বেধেছিল। সে স্বপ্নই স্বাধীনতা সংগ্রাম, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধসহ ইতিহাসের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আমাদের পথ দেখিয়েছে, এখনো দেখায়। তারপর আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারির মিলেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি; দিবসটি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসও বটে। মাতৃভাষা বাংলার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের মহিমা ব্যাপ্ত হয়েছে পৃথিবীর সব জাতি-গোষ্ঠীর মাতৃভাষার স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে। এর থেকে বড় গৌরবের আর কি হতে পারে! বাঙালির সে গৌরবে শ্রদ্ধার ফুলে ভরে যায় শহীদ মিনার। খালি পায়ে শিশির ভেজা শ্রদ্ধা নিবেদনে খুঁজে পাওয়া যায় বাঙালির আবেগ। একুশের প্রভাত ফেরি আর কণ্ঠে অমর সঙ্গীত- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’, এ দু’টোই যেন সমার্থক। একুশের প্রভাত ফেরি আমাদের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, প্রতিবাদের প্রভাত ফেরি। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীনতার এত বছর পর আজও একুশের অম্লান চেতনা সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া যায়নি। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে দেশের সংবিধানে বাংলার স্বীকৃতি মিললেও সর্বস্তরে তা চালুর দাবি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। তবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির সরকার ক্ষমতাসীন থাকায় জাতি অনেকটা আশান্বিত।