বাহুবলে ৪ শিশু হত্যায় ঘাতক রুবেলের লোমহর্ষক বর্ণনা
20, February, 2016, 1:28:36:AM
নতুনবাজার ৭১ প্রতিনিধিঃ
পঞ্চায়েত বিরোধের জেরেই হবিগঞ্জের বাহুবলে চার শিশু হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জবানবন্দীতে জানিয়েছেন এক অভিযুক্ত রুবেল। হত্যায় অংশ নিয়েছিল ৬ ঘাতক। ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় অপহরণের রাতেই তাদেরকে শ্বাস রোধে হত্যা করা হয়। আর গভীর রাতে বস্তায় করে নিয়ে ইছা বিলে মাটি চাপা দেয় ঘাতকরা।
শুক্রবার এমনই লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে ঘাতক রুবেল। হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ খোন্দকারের আদালতে সোয়া ২ ঘন্টাব্যাপী জবানবন্ধীতে সে এসব বর্ণনা দেয়।
বর্ণনায় সে বলে, আব্দুল আলী বাগালের হুকুমেই তাদেরকে হত্যা করা হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ওই গ্রামের বাচ্চু মিয়া সিএনজি অটোরিকশায় করে ৪ শিশুকে ধরে নিয়ে যায়। ওই রাতেই তাদেরকে হত্যা করা হয়। রাতেই লাশগুলো বস্তায় করে নিয়ে ইছা বিলে বালুতে পুঁতে রাখা হয়। শুক্রবার রাতে হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ খোন্দকারের আদালতে এমনই লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় রুবেল।
সে জানায়, বাবা আব্দুল আলী বাগালের নির্দেশে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় সিএনজি অটোরিকশায় করে নিয়ে যায় বাচ্চু মিয়া। তাদেরকে হত্য করা হয়। জড়িত অন্যরা হলো রুবেল, আরজু, হেলাল, শাহেদ ও ওস্তার।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন আবদুল আলী, আরজু ও রুবেল।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিকেলে মাঠে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় ওই চার শিশু। নিখোঁজের পাঁচদিন পর বুধবার সকালে বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি এলাকা থেকে তাদের মাটি চাপা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শিশুরা হলো- উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে স্থায় স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাত ভাই আব্দুল আজিজের ছেলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তাজেল মিয়া (১০), আবদাল মিয়ার ছেলে প্রথম শ্রেণির ছাত্র মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাইল হোসেন (১০)।
পরে বুধবার বেলা ১১টার দিকে বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাদীঘি গ্রামের পার্শ্ববর্তী বালুরচর থেকে চার শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত চার শিশুর পরিবারকে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়েছে।
এদিকে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, চার শিশু হত্যার বিচার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হবে। অন্যান্য শিশু নির্যাতন মামলার বিচারকাজ এর আগে যেভাবে হয়েছে, এটিও সেভাবে হবে।